দালালের দৌরাত্মে
অসহায় রোগীরাঃ শেকৃবি শিক্ষককে
হত্যার হুমকি
মোঃ আব্দুল্লাহ আল
জাবের, শেকৃবি।।
সরকারি হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্মের
কথা কারোর অজানা নয়। তবে অসহায়
মানুষদের থেকে জোঁকের মত রক্ত চুষে
নিতে একটুও হৃদয় কাঁপে না তাদের।
তাদের সিন্ডিকেটের কারণে
সাধারণ জনগণ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে।
দরিদ্র রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা
দেয়ার জন্য জনপ্রতিনিধির সুপারিশের
কোন মূল্যই এদের কাছে নেই! মুল্য নেই
নীতির, মানবতার এমনকি
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরও। আর এতে
সহযোগিতা করছে তাদেরই কিছু দোসর,
যারা ক্ষমতার অপব্যাবহার করে অনিয়ম
আর নীতি বহির্ভূত কাজ করে যাচ্ছেন
দিনের পর দিন। তারই একটি নমুনা
দেখা গেছে আজ জাতীয় হৃদরোগ
ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে। দালাল
চক্রের খপ্পর থেকে এক রোগীকে
বাঁচানোর চেষ্টা করায়
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের
(শেকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড
প্যারাসাইটোলজি বিভাগের
চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসানকে
হত্যার হুমকি দিয়েছে দালাল চক্রের
সদস্যরা। এমন ঘটনা ঘটেছে
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা.
এস টি এম আবু আজমের সামনেই। ডা.
মো. কামরুল হাসান জানান, কিছুদিন
আগে তার নিজ এলাকা থেকে এক
অসহায় লোক হৃদরোগ হাসপাতালে
ভর্তি হন। টাকার অভাবে চিকিৎসা
করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে
টাকা তোলার সময় তার সাথে পরিচয়
হয়। এরপর কামরুল হাসানের
তত্ত্বাবধায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা
তুলে দেয় হয়। যে রোগীকে কামরুল
হাসান সাহায্য করেছেন তার পাশের
সিটের সাজেদা আক্তার নামে
পঞ্চগড় থেকে আসা আরেক অসহায়
নারী তার বাচ্চাকে বাঁচাতে
কামরুল হাসানের নিকট কান্নাকাটি
করে সাহায্য চান। ফলে অপরিচিত
হলেও কামরুল হাসান ওই নারীকেও
সাহায্য করতে চেষ্টা করেন।
শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এই নারীকেও
বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে টাকা তুলে
দেয়া হয়। কিন্তু ওই নারী কামরুল
হাসানের কাছে হাসপাতালের
দালাল চক্রের কথা জানিয়ে বলেন,
হাসপাতাল থেকে একই টেস্ট বারবার
দেয়া হচ্ছে এবং ওই নারী নিজ
এলাকা দেবীগঞ্জ আসনের এমপির
সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও তারা তাকে
কোনো ছাড় বা সুবিধা দিতে রাজি
হচ্ছে না। ঘটনাটি শুনে তিনি
হাসপাতালে গেলে তাকেও কোনো
পাত্তা দেয় না দালাল চক্রের
লোকজন। এক পর্যায়ে দালাল চক্রের
সদস্যরা কামরুল হাসানের সাথে বাগ-
বিতণ্ডা শুরু করে। এসব ঘটনার বিচার
দিতে হাসপাতালের পরিচালকের
রুমে গেলেই দালালরা সেখানেই
তাকে হত্যার হুমকি দেন। তিনি আরও
জানান, পরিচালকের রুমে অভিযোগ
দিতে গিয়ে দেখি যেসব লোকের
সাথে আমার বাক-বিতন্ডা হয়েছে
তারা সেখানেই বসা। এরপর আমার
অভিযোগ তুলে ধরলে তারা আমাকে
বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিতে শুরু
করে। তাতেও তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি
আমি ঐ রুম থেকে বেরিয়ে যেতে
চাইলে কর্মচারী দিয়ে আমাকে
আটকিয়ে রাখা হয়। এরপর একজন আমাকে
বলে আমার মত কয়েকজনকে নাকি
গায়েব করে ফেলার ক্ষমতা তার আছে!
ঘটনাটি কামরুল হাসানের ছাত্ররা
জানতে পেরে হাসপাতাল গেলে
দালালরা পালিয়ে যান। এরপর
উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা
হাসপাতালের অভ্যন্তরে গন্ডগোল
করতে চাইলেও অন্যান্য শিক্ষক এবং
পরবর্তিতে শেরেবাংলা থানা
থেকে পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের
থামিয়ে দেয় এবং বিচারের আশ্বাস
দেয়। এ ব্যাপারে শেরেবাংলা
থানার ওসি জি জি বিশ্বাস এবং এস
আই সাব্বির বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক
মীমাংসার জন্য শিক্ষক কামরুল
হাসানকে অনুরোধ করেন। এ সময়
হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে
শিক্ষক কামরুল হাসান,
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
মোঃ মিজানুর রহমান, এনিম্যাল সাইন্স
এন্ড ভেটেরিনারী মেডিসিন
অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ
মোফাজ্জল হোসাইন, হাসপাতালের
পরিচালক অধ্যাপক ডা.এস টি এম আবু
আজম, অন্যান্য ডাক্তার, শেরেবাংলা
থানা পুলিশের ওসি, এস আই এবং
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের
সাধারণ সস্পাদক দেবাশীষ দাশ ও
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা
বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন। পরে
ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা.
এসটিএম আবু আজম দু’দিনের মধ্যে তিন
সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে তদন্ত
করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে
আসেন। রোগী এবং স্থানীয়
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা
গেছে, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও
হাসপাতালে বেড়েই চলেছে দালাল
চক্রের দৌরাত্ম। এই দালাল চক্রের
খপ্পরে পরে অসহায় হয়ে পড়ছেন দেশের
বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন
শ্রেণী-পেশার রোগীরা। মন্ত্রী-
এমপিদের সুপারিশেরও তোয়াক্কা
করছে না এসব দালাল চক্রের সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মিজানুর
রহমান বলেন, ‘হৃদরোগের পরিচালক এই
অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্যে দুঃখ প্রকাশ
অসহায় রোগীরাঃ শেকৃবি শিক্ষককে
হত্যার হুমকি
মোঃ আব্দুল্লাহ আল
জাবের, শেকৃবি।।
সরকারি হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্মের
কথা কারোর অজানা নয়। তবে অসহায়
মানুষদের থেকে জোঁকের মত রক্ত চুষে
নিতে একটুও হৃদয় কাঁপে না তাদের।
তাদের সিন্ডিকেটের কারণে
সাধারণ জনগণ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে।
দরিদ্র রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা
দেয়ার জন্য জনপ্রতিনিধির সুপারিশের
কোন মূল্যই এদের কাছে নেই! মুল্য নেই
নীতির, মানবতার এমনকি
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরও। আর এতে
সহযোগিতা করছে তাদেরই কিছু দোসর,
যারা ক্ষমতার অপব্যাবহার করে অনিয়ম
আর নীতি বহির্ভূত কাজ করে যাচ্ছেন
দিনের পর দিন। তারই একটি নমুনা
দেখা গেছে আজ জাতীয় হৃদরোগ
ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে। দালাল
চক্রের খপ্পর থেকে এক রোগীকে
বাঁচানোর চেষ্টা করায়
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের
(শেকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড
প্যারাসাইটোলজি বিভাগের
চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসানকে
হত্যার হুমকি দিয়েছে দালাল চক্রের
সদস্যরা। এমন ঘটনা ঘটেছে
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা.
এস টি এম আবু আজমের সামনেই। ডা.
মো. কামরুল হাসান জানান, কিছুদিন
আগে তার নিজ এলাকা থেকে এক
অসহায় লোক হৃদরোগ হাসপাতালে
ভর্তি হন। টাকার অভাবে চিকিৎসা
করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে
টাকা তোলার সময় তার সাথে পরিচয়
হয়। এরপর কামরুল হাসানের
তত্ত্বাবধায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা
তুলে দেয় হয়। যে রোগীকে কামরুল
হাসান সাহায্য করেছেন তার পাশের
সিটের সাজেদা আক্তার নামে
পঞ্চগড় থেকে আসা আরেক অসহায়
নারী তার বাচ্চাকে বাঁচাতে
কামরুল হাসানের নিকট কান্নাকাটি
করে সাহায্য চান। ফলে অপরিচিত
হলেও কামরুল হাসান ওই নারীকেও
সাহায্য করতে চেষ্টা করেন।
শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এই নারীকেও
বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে টাকা তুলে
দেয়া হয়। কিন্তু ওই নারী কামরুল
হাসানের কাছে হাসপাতালের
দালাল চক্রের কথা জানিয়ে বলেন,
হাসপাতাল থেকে একই টেস্ট বারবার
দেয়া হচ্ছে এবং ওই নারী নিজ
এলাকা দেবীগঞ্জ আসনের এমপির
সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও তারা তাকে
কোনো ছাড় বা সুবিধা দিতে রাজি
হচ্ছে না। ঘটনাটি শুনে তিনি
হাসপাতালে গেলে তাকেও কোনো
পাত্তা দেয় না দালাল চক্রের
লোকজন। এক পর্যায়ে দালাল চক্রের
সদস্যরা কামরুল হাসানের সাথে বাগ-
বিতণ্ডা শুরু করে। এসব ঘটনার বিচার
দিতে হাসপাতালের পরিচালকের
রুমে গেলেই দালালরা সেখানেই
তাকে হত্যার হুমকি দেন। তিনি আরও
জানান, পরিচালকের রুমে অভিযোগ
দিতে গিয়ে দেখি যেসব লোকের
সাথে আমার বাক-বিতন্ডা হয়েছে
তারা সেখানেই বসা। এরপর আমার
অভিযোগ তুলে ধরলে তারা আমাকে
বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিতে শুরু
করে। তাতেও তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি
আমি ঐ রুম থেকে বেরিয়ে যেতে
চাইলে কর্মচারী দিয়ে আমাকে
আটকিয়ে রাখা হয়। এরপর একজন আমাকে
বলে আমার মত কয়েকজনকে নাকি
গায়েব করে ফেলার ক্ষমতা তার আছে!
ঘটনাটি কামরুল হাসানের ছাত্ররা
জানতে পেরে হাসপাতাল গেলে
দালালরা পালিয়ে যান। এরপর
উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা
হাসপাতালের অভ্যন্তরে গন্ডগোল
করতে চাইলেও অন্যান্য শিক্ষক এবং
পরবর্তিতে শেরেবাংলা থানা
থেকে পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের
থামিয়ে দেয় এবং বিচারের আশ্বাস
দেয়। এ ব্যাপারে শেরেবাংলা
থানার ওসি জি জি বিশ্বাস এবং এস
আই সাব্বির বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক
মীমাংসার জন্য শিক্ষক কামরুল
হাসানকে অনুরোধ করেন। এ সময়
হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে
শিক্ষক কামরুল হাসান,
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
মোঃ মিজানুর রহমান, এনিম্যাল সাইন্স
এন্ড ভেটেরিনারী মেডিসিন
অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ
মোফাজ্জল হোসাইন, হাসপাতালের
পরিচালক অধ্যাপক ডা.এস টি এম আবু
আজম, অন্যান্য ডাক্তার, শেরেবাংলা
থানা পুলিশের ওসি, এস আই এবং
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের
সাধারণ সস্পাদক দেবাশীষ দাশ ও
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা
বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন। পরে
ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা.
এসটিএম আবু আজম দু’দিনের মধ্যে তিন
সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে তদন্ত
করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে
আসেন। রোগী এবং স্থানীয়
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা
গেছে, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও
হাসপাতালে বেড়েই চলেছে দালাল
চক্রের দৌরাত্ম। এই দালাল চক্রের
খপ্পরে পরে অসহায় হয়ে পড়ছেন দেশের
বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন
শ্রেণী-পেশার রোগীরা। মন্ত্রী-
এমপিদের সুপারিশেরও তোয়াক্কা
করছে না এসব দালাল চক্রের সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মিজানুর
রহমান বলেন, ‘হৃদরোগের পরিচালক এই
অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্যে দুঃখ প্রকাশ
করে অভিযুক্তদের বিরূদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।